আলমের খান: বেশ জমে উঠেছে কাতার বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার মাত্র সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বিগত কোনো বিশ্বকাপ এত জমে ওঠেনি। কাতার বিশ্বকাপে বড় দল ছোট দল বলে কোন কিছুই যেন নেই। নির্দিষ্ট দিনে যে কোনো দল







জিততে পারে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সৌদি আরবের ঐতিহাসিক জয়, সেই জয়ের দুইদিন না পেরোতেই জাপানিজদের বিপক্ষে জার্মানদের হার। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ড্র। কানাডার বিপক্ষে বেলজিয়ামের ১-০ ব্যবধানে
কোনোরকম জয়। এসব কিছুই জমিয়ে তুলেছে কাতার বিশ্বকাপকে। তবে গতকাল বেলজিয়ামের বিপক্ষে মরক্কোর ২-০ ব্যবধানে জয় যেন বিগত সবকিছুকেই ছাড়িয়ে গিয়েছে। ম্যাচ জেতার পাশাপাশি মাঠে রীতিমতো আধিপত্য বিস্তার করে







খেলেছে মরক্কানরা। অথচ এই বেলজিয়াম বিগত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট। তবে অনিশ্চয়তার এই বিশ্বকাপের শীর্ষ চার দাবিদার ধরা হচ্ছে সেই চিরায়ত বড় দলগুলোকেই। বিশ্লেষকদের মতে টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দল ব্রাজিল।
ব্রাজিলই বোধ হয় একমাত্র দল যার কোনো দুর্বলতা এখন পর্যন্ত বের করা যায়নি। সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেও সেই দুর্ধর্ষ ব্রাজিলকেই দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। ২-০ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে কমপক্ষে আরো দুটি গোল হতেই পারতো। সার্বিয়ার







গোলরক্ষকের অসাধারণ পারফরমেন্সে কমপক্ষে দুটি গোল থেকে বঞ্চিত হয়েছে সেলেসাওরা। ব্রাজিলের আক্রমণ ভাগ মাঝমাঠ এবং রক্ষণভাগ তিনটি বিভাগই অসম্ভব শক্তিশালী। তবে গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোতে হয়তো ব্রাজিলের রক্ষণভাগের
কোনো পরীক্ষাই দিতে হবে না। সার্বিয়া বিপক্ষে ব্রাজিলের রক্ষণভাগের একপ্রকার কিছুই করতে হয়নি বলা যায়। ব্রাজিলের পরই টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট ফ্রান্স। অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল বর্তমান







চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। পরবর্তী ম্যাচে ডেনমার্ককে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে এমবাপ্পেরা। আক্রমণ ভাগ এবং মাঝ মাঠে একপ্রকার অপ্রতিরোধ্য ফ্রান্স দলটি। তবে রক্ষণভাগে রয়েছে কিছুটা দুর্বলতা। সেটি কাটিয়ে উঠতে পারলেই
একপ্রকার অপ্রতিরোধ্য হয়ে যাবে এই দলটি। এবারের টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট ২০১০ এর চ্যাম্পিয়ন স্পেন। কোস্টারিকাকে সাত গোলে ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়নদের মতোই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল স্প্যানিশরা। শক্তিশালী জার্মানির বিপক্ষে গতকাল ড্র করে স্পেন।







তবে জার্মানদের বিপক্ষে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে স্প্যানিশরা। ৬৩ শতাংশ বল স্প্যানিশদের দখলে ছিল। জার্মানির ৩৪০ পাশের বিপরীতে ৬৩৪ পাস দেয় স্পেনিশরা। অর্থাৎ তাদের ছোট ছোট পাসে খেলার অভ্যাস টিকি টাকা বেশ ভালোভাবেই কার্যকর করছে স্প্যানিশরা। তাই এবারের বিশ্বকাপের ফেভারিটদের লিস্টে রাখতেই হবে স্পেনকে।
১৯৬৬ সালে সর্বশেষবার বিশ্বকাপ ট্রফি ছুতে পেরেছিল ইংলিশরা। এরপর কত যুগ পেরিয়েছে কত প্রজন্ম পার হয়েছে তবে সে কাঙ্খিত বিশ্বকাপটি ছোঁয়া হয়নি ইংলিশদের। এবারের আসরে এত বছরের খরা কাটানোর সুযোগ রয়েছে ইংলিশদের হাতে। হ্যারিকেনের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ভালো ফর্মে রয়েছে। টুর্নামেন্টে অন্যান্য বড় দল গুলোর







বাজে পারফরমেন্সের কারণে ইংল্যান্ডের জন্য রাস্তাটা হয়তো আরও সহজ হয়ে গিয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে এই চার দলের হাতে বিশ্বকাপ ওঠার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তবে ফুটবল যেহেতু আনপ্রেডিক্টেবল, তাই শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন কে হবে সে প্রশ্নটি সময়ের হাতেই তুলে রাখা হোক।