






তাসকিন আহমেদের মুখে আজকাল ‘প্রক্রিয়া’ শব্দটা খুব বেশি শোনা যায়। এতটাই যে পাঠক হিসেবে সেটা একঘেয়ে লাগা শুরু করেছে। এর পেছনে একটা কারণও আছে। বাংলাদেশ দল ম্যাচ জিতলেই ইদানীং ম্যাচসেরার পুরস্কারটা তাসকিনের







হাতেই উঠছে। পুরস্কার নিতে এসে সঞ্চালকের প্রশ্নের উত্তরে নিজের সাফল্যের পেছনে প্রক্রিয়ার কথাটাই বলছেন তাসকিন। এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভ পর্বে তিনিই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। তাঁর সাফল্যের গল্প জানতে







সবাই এখন কৌতূহলী। ফলাফল নিয়ে না ভেবে তাঁর কঠোর পরিশ্রম করে যাওয়া, ফিটনেস ধরে রাখা—সেসব নিয়ে কৌতূহল মেটাতে তাসকিনের হাস্যোজ্জ্বল মুখ থেকে বেরিয়ে আসে এই কথাগুলোই। আজকের কথাই ধরুন। জিম্বাবুয়ের







বিপক্ষে ম্যাচ জেতানোর পর ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইক আথারটনের প্রশ্নের উত্তরে তাসকিন বলছিলেন, ‘আমি নিজের প্রক্রিয়া মেনে চলছি। সব সময় উন্নতির চেষ্টা করে যাচ্ছি। এটাই, আর কিছু নয়।’ ব্রিসবেনে তাসকিনের ৩ উইকেটের







সৌজন্যে ১৫০ রান করেও ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন তাসকিন। দ্বিতীয় ম্যাচসেরার পুরস্কারের জন্য তাসকিনকে বেশি







দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ব্রিসবেনে নাটকীয়তায় ঠাসা আজকের ম্যাচে আরও অনেকেরই উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ছিল। তবু তাসকিনের হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। যেন বাংলাদেশের জয় মানেই তাসকিনের
ম্যাচসেরা হওয়া। আজ অবশ্য মঞ্চটাও তেমনই ছিল। ব্রিসবেনে মাত্র ১৫০ রান করে যদি জিততে হয়, সে ক্ষেত্রে বোলারদের বিশেষ কিছু করতেই হতো। আর আজকাল বাংলাদেশ দলে সে কাজটা করছেন তাসকিনই। বাংলাদেশের জয়ে যেন
তাসকিনের অবদান এখন নিয়মিত ঘটনা। তাসকিনের এই ভালো সময়টা যে প্রক্রিয়ার হাত ধরে এসেছে, সেটি নিশ্চয়ই কেউ বদলাতে চাইবে না। সে জন্যই হয়তো তিনি এখন প্রক্রিয়ায় বিভোর। যেখানে কঠোর পরিশ্রম, নিজেকে প্রতিনিয়ত ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা ছাড়া কিছুই নেই। আরও একটা কথা তাসকিনের মুখে নিয়মিত শোনা যায়, সেটা হলো
বিশ্বসেরা বোলার হওয়ার বড় স্বপ্নের কথা। তিনি চান বিশ্বের সেরা পেসারদের একজন হতে। বিশ্বসেরা হওয়ার অন্যতম শর্ত সব কন্ডিশনের বোলার হওয়া। জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে তাসকিন সেটাই করছেন। এ বছর দক্ষিণ আফ্রিকার
মাটিতে তিনি ৫ উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের ওয়ানডে সিরিজে হারাতে সাহায্য করেছেন। আর এবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এসে কী করছেন, সেটা তো সবার স্মৃতিতে তরতাজা। তাসকিন আজ নিজেই বলছিলেন, ‘এই কন্ডিশন খুব উপভোগ করছি।
কারণ, ঘরের মাঠে নিচু বাউন্সের মন্থর উইকেটে খেলে থাকি। এখানে ইনিংসের শুরুতে মুভমেন্ট পাচ্ছি। বাউন্স পাচ্ছি। সব ভালোই এগোচ্ছে।’ এবারের বিশ্বকাপে তিন ম্যাচ খেলে তিনটিতেই প্রথম ওভারে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন। গতি তো আছেই, আউটসুইং বোলিং করে প্রতিপক্ষ দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের ক্রিজে বেঁধে রাখছেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা,
অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের বাউন্সে গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন না। তেড়েফুঁড়ে এসে আগুনে বোলিং করতে গিয়ে রান দিচ্ছেন না। তাসকিন এখন পেস বোলিং বিভাগের নির্ভরতার নাম। শুনতে যতটা একঘেয়ে লাগুক না কেন, সেটা তাসকিনের ওই প্রক্রিয়ারই ফল।