






কাতার বিশ্বকাপে ফুটবল বিশ্ব দেখবে অসাধারণ এক দৃশ্য। আপন দুই ভাই খেলবেন দুই দেশের জার্সি গায়ে। আফ্রিকার দেশ ঘানার হয়ে মাঠে নামবেন ইনাকি উইলিয়ামস। আর তার ছোট ভাই







নিকো উইলিয়ামস খেলবেন শিরোপার অন্যতম দাবিদার স্পেনের হয়ে। দুই ভাইয়ের খেলার ধরনও বিপরীত। ঘানার ডিফেন্সে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাবেন ইনাকি।







অন্যদিকে স্পেনের হয়ে নিকোর কাজ বল নিয়ে দুরন্ত গতিতে প্রতিপক্ষের গোলমুখে ঢুকে পড়ে গোল আদায়। স্পেনের অন্যতম ফরোয়ার্ড তিনি। এসব তথ্য অদ্ভুত লাগতে পারে। আফ্রিকার







ঘানার বাসিন্দা স্পেনের জাতীয় দলে ঢুকে পড়লেন। ঠাঁই মিলল বিশ্বকাপ দলে? বিষয়টি খোলাসা করতে জানতে হবে এ দুই ভাইয়ের বেড়ে ওঠার গল্প, যা রোমাঞ্চে টইটুম্বর এবং সিনেমাকেও হার







মানাবে তা। ইনাকি ও নিকো দুই ভাইয়ের জন্ম স্পেনেই। নিকোর চেয়ে আট বছরের বড় ইনাকি। তাদের বাবা-মায়ের দেশ ঘানা। আর্থিক দৈন্যতায় ইনাকি-নিকোর বাবা ফেলেক্স ও মা মারিয়া ঘানা







থেকে স্পেন গিয়েছিলেন। সেই যাওয়ার কাহিনি ছিল অনেক কষ্টের। ঘানা থেকে চার হাজার কিলোমিটার দূরত্বের স্পেনে রওনা হয়েছিলেন তারা। লম্বা এই পথ তারা পাড়ি জমিয়েছিলেন একটি ট্রাকের







মধ্যে গাদাগাদি করে। আর সাহারা মরুভূমির তপ্ত বালির ওপর পায়ে হেঁটে। ৪০-৫০ ডিগ্রি গরমের মধ্যে সাহারা মরুভূমি পায়ে হেঁটে তারা পৌঁছেছিলেন স্পেনের মেলিলায়। ফেলেক্সের পায়ে ফোসকা







পড়ে গিয়েছিল। সেটি দীর্ঘস্থায়ী ক্ষততে রূপ নেয়। যার প্রভাবে এখনো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটেন ফেলেক্স। স্পেনে পৌঁছানোর পর অবৈধ অভিবাসনের দায়ে তারা গ্রেফতার হয়েছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পর







তারা স্পেনে রাজনৈতিক আশ্রয় পান এবং পরে পান নাগরিকত্ব। বড় ভাই স্পেনের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে তার বাবার দেশ ঘানার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। ঘানার জার্সিতে দুটি ম্যাচও খেলেছেন তিনি। যার
একটি ম্যাচ ছিল ব্রাজিলের বিপক্ষে। ইনাকি ২০১৩ সালে যখন লা লিগার অ্যাথলেটিকো বিলবাওয়ে যোগ দেন, তখন নিকো উইলিয়ামসের বয়স ১১ বছর। তিনি তখন যোগ দিয়েছিলেন অ্যাথলেটিকো
বিলবাওয়ের যুব দলে। ক্লাবে যোগ দেওয়ার এক বছর পর বিলবাওয়ের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল ইনাকির। ইনাকি স্প্যানিশ লিগে ২০৩ ম্যাচ খেলে তারকা বনে গেছেন। তখন তাকে জাতীয় দলে টেনে
নেয় ঘানা। ইনাকিও ঘানাকেই বেছে নেন। অন্যদিকে ছোট ভাই নিকো উইলিয়ামসের ক্যারিয়ার অতোটা সমৃদ্ধ নয়। গত বছর কেবল পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ে
দুর্দান্ত খেলে নজরে পড়েন স্পেন দলের কোচের। তাকে স্পেন জাতীয় দলে টেনে নেওয়া হয়।