পাহাড়ি জনপদ পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতেও ভোজ্য তেল নিয়ে তেলেসমাতি শুরু করেছে ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। কেউ তেল গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন বেশি মুনাফার আশায়, আর কেউ কেউ কোম্পানি কর্তৃক মোড়কে লেখা মূল্য মুছে ফেলে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে ভোক্তাদের কাছে।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মূল্য তালিকাও টাঙানো নেই। এক সপ্তাহ ধরে চলছে এমন অবস্থ। এ চিত্র শুধু জেলা সদরে নয়, খাগড়াছড়ির প্রতিটি উপজেলাতেই এমন সংকট তৈরি করেছে ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
অভিযোগ পেয়ে তেলেসমাতির হাঁড়ি ভাঙতে কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস (সিআরবি) খাগড়াছড়ি জেলা শাখার নেতাদের নিয়ে পাহাড়িয়া হাটে অভিযান চালায় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর।
মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি বাজারে অভিযানে নামেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক পাপীয়া সুলতানা লীজা। অভিযানে তেল গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি এবং অতিরিক্ত দামে বিক্রির সত্যতা পেয়ে চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৫৮ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এ সময় সোয়াবিন তেল গুদামজাত করে বাজার মূল্যে অস্থিতিশীলতা তৈরির অপরাধে এবং মূল্য তালিকা না রাখার অপরাধে ‘ফ্রেশ কোম্পানি’র জেলা ডিলার মেসার্স জাফর স্টোরকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। অধিক মূল্য রাখা এবং মূল্য তালিকা না রাখার অপরাধে মেসার্স পলাশ স্টোরকে ১০ হাজার টাকা ও নিজাম স্টোরকে ৮ হাজার টাকা, মামুন স্টোর নামে আরেকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি ও সোয়াবিন তেল বিক্রিতে অতিরিক্ত মূল্য রাখার অপরাধে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। অভিযানে কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস (সিআরবি) খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রউফ ও যুগ্ন-সম্পাদক মো. মাইন উদ্দিনসহ সিআরবি’র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে সহকারী পরিচালক পাপীয়া সুলতানা লীজা বলেন, ‘সয়াবিন তেল গুদামে মজুদ রেখে তেল নেই বলে বাইরে বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দিয়েছিলো মেসার্স জাফর স্টোর। এছাড়াও অধিক মূল্য রাখা, মূল্য তালিকা না রাখা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির অভিযোগে আরো তিনটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড প্রদান করেছি। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ না করতে তাদের কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।’
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, জেলার বাইরের মতো পাহাড়িয়া বাজারেও পাঁচ লিটার বোতলের তেলের বড্ড আকাল। এক ও দুই লিটার বোতলের তেল পাওয়া গেলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
আর অন্যদিকে ডিলাররা বলছেন , ‘প্রায় দেড় মাস ধরে নাকি কোম্পানি থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। কোম্পানি থেকে বলা হচ্ছে নাকি, ‘সরকার সয়াবিন তেল বিক্রির যে দর নির্ধারণ করে দিয়েছে বিদেশ থেকে তার চেয়ে বেশি দামে তেল আমদানি করতে হচ্ছে তাদের। আর জন্য কোম্পানি তেল দিচ্ছে না তাদের।’