একসময় ডাকসুসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচন করার জন্য নিয়মিত লিখতাম। টকশোয় অনড় অবস্থান থেকে বলতাম। কিন্তু ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনের ফলাফলে যে নেতৃত্ব বেরিয়ে আসে এবং তাদের কথাবার্তা, কর্মকান্ড দেখে আর সে দাবি করি না। আদর্শিক গণমুখী রাজনীতি ও আদর্শিক ছাত্ররাজনীতির পুনর্জাগরণ না ঘটলে ডাকসু নির্বাচন হাস্যকর নেতৃত্ব উপহার দেবে। যা অতীতের গৌরব ধুলোয় মিশে যাবে।







ডাকসুর সাবেক ভিপি ছাত্র অধিকার পরিষদের নুরুল হক নূরের ওপর যখন তখন মারধর, লাঞ্ছিত করা নিয়ে অবাক যেমন হতাম তেমনি বিস্মিত হয়েছি তার তৎপরতা নিয়ে। কথাবার্তা নিয়ে।







ডাকসুর সাবেক ভিপি নূর আসলে কার? কেউ বলত একসময় ছাত্রলীগ করেছে। প্রধানমন্ত্রীকে মা-ও ডেকেছে। কেউ বলত সে আসলে জামায়াত। তার রাজনীতির শিকড় আমি কখনো ধরতে পারি না। তবে দেখি যখন তখন যে কোনো ইস্যুতে যে কারও সঙ্গে রাজপথে, যে কারও সঙ্গে মঞ্চে, কখনো বা একাই মাঠে গড়াগড়ি খাচ্ছে।







তবে তার নাটাইটা কার হাতে? এ প্রশ্নের উত্তর মেলে না। কখনো বিভ্রান্ত কখনো বা রহস্যময় মনে হতো। তবে এবার তার চরিত্রটা অনেকটা উন্মোচিত হয়েছে। সে হেফাজতের পক্ষে জোরালোভাবে কথা বলেছে, হেফাজতের পক্ষেই পথে নেমেছে। ভারতবিরোধিতার উগ্র জিকিরেও সে পিছিয়ে নেই। জামায়াতের হাতেও তার নাটাই থাকলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কথা বেশি বললে বাড়ে কথা। বেশি কথা বললে বিপদটাও আসে না, মনের ভিতরের জমানো বিশ্বাস ও বিদ্বেষ বেরিয়ে আসে।







নুরুল হক নূর এবার লাইভে আওয়ামী লীগবিদ্বেষী কথা বলতে বলতে একেবারে এমন ভয়ংকর কথা বলেছে যা কখনো আওয়ামী লীগের চরম শত্রুও বলেনি। নিজের গুরুত্ব নূর যত পেয়েছে সরকার ততই তাকে আমলে নেয়নি। মামলার বাইরে রেখেছে। কিন্তু নূর বলেছে, ‘প্রকৃত মুসলমান আওয়ামী লীগ করতে পারে না।’ এমন উন্মাদের প্রলাপ ভয়ংকর অসত্য কথার সঙ্গে ওলামারা ও কোনো সজ্জন মানুষ একমত হতে পারবেন না।







সবাই জানেন, শেখ হাসিনার দিন শুরু হয় তাহাজ্জুদ, কোরআন তিলাওয়াত দিয়ে। তিনি আল্লাহভীরু ধর্মপ্রাণ। আওয়ামী লীগেই নামাজির সংখ্যা বেশি। তারা ধর্মপ্রাণ, আল্লাহভীরু কিন্তু অসাম্প্রদায়িক। কিছু সাম্প্রদায়িক একযোগে ক্ষমতার লোভে দলে প্রবেশ করেছে এমন অভিযোগ আছে। নূর ডিজিটাল আইনে মামলা খেয়ে ক্ষমাও পেয়েছে।







এমন অথর্ব বিতর্কিত আনইমপ্রেসিড ডাকসু ভিপি ইতিহাসে আসেনি। নূর এসে বিভ্রান্তির চোরাবালিতে ডুবছে। তবে তার নাটাইটা কার হাতে জানতে হবে। জামায়াত নাকি অন্য কোথাও? তার রাজনীতির অর্থায়ন করে কারা? আইনের ঊর্ধ্বে তাকেও যেতে দেওয়া যায় না। সূত্র- বাংলাদেশ প্রতিদিন।






