






সবুজবাগের দক্ষিণগাঁওয়ের কুসুমবাগ এলাকার বাড়ির আ’ন্ডারগ্রাউন্ডে গত ১৬ জুন এক নারীর গলিত লাশ পাওয়া যায়। তখন অনেক খোঁজ নিয়েও তার পরিচয় মেলেনি। এ ঘটনায় দায়ের মামলাটি তদ’ন্তের একপর্যায়ে জানা যায় তার নাম পলি আক্তার। তাকে খু’ন করার পর ওই স্থানে লাশটি ফেলে রাখা হয়েছিল।







এরপর তার বাবা ও অন্যান্য স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। তবে জীবনের নি’ষ্ঠুর বাঁকে ধাক্কা খেয়ে যৌ’নকর্মী হয়ে ওঠা এই নারীর ব্যাপারে তারা একটুও সহানুভূতি দেখাননি। অবশ্য পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার আগেই আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে তার লা’শ দাফন করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের সবুজবাগ জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার রাশেদ হাসান জানান, সিএনজি অটোরিকশার চালক সাদা মিয়াকে গ্রে’প্তারের পরই এ হ’ত্যাকা’ণ্ডের রহ’স্য উদঘা’টন হয়। যে ভবন থেকে পলির লা’শ উ’দ্ধার করা হয়, সেটির নিচতলায় ভাড়া থাকেন সাদা।







তিনি জানান, গত ১৩ জুন বিকেলে তিনি নিজের অটোরিকশায় পলিকে রামপুরা থেকে বাসায় নিয়ে আসেন। অন্তর’ঙ্গ সময় কাটানোর পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পারিশ্রমিক নিয়ে পলির সঙ্গে তার বাকবিত’ণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সাদা ক্ষি’প্ত হয়ে তাকে শ্বাসরো’ধে হ’ত্যা করেন। পরে রাতে বাসার আ’ন্ডারগ্রা’উন্ডে জমে থাকা পানির মধ্যে লা’শ ফেলে দেন। তিন দিন পর লা’শটি উ’দ্ধার করা হয়। এ ঘটনা তদ’ন্তের একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার গাইবান্ধার সাঘাটা থেকে সাদাকে গ্রে’প্তার করে পুলিশ।







তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময়ই বোঝা যায়, অন্য কোথাও হ’ত্যা করে লা’শ ওই বাড়ির আন্ডারগ্রাউন্ডে ফেলা সহজ নয়। তখনই ধারণা করা হয়, বাড়ির কেউ হ’ত্যায় জড়িত। দু’দিন পর জানা যায়, নিচতলার ভাড়াটে সাদা মিয়ার খোঁজ নেই। তিনি স্থানীয় একটি চায়ের দোকানিকে বলেছেন, শ্বশুর মা’রা যাওয়ায় গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। আবার তার রুমমেট যোগাযোগ করলে জানান, তিনি আর আসবেন না। পরে তিনি নিজের মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন। এতে তার প্রতি স’ন্দেহ বেড়ে যায়।







তদন্ত সূত্র জানায়, ৩৫ বছর বয়সী পলির জীবন অনেক বেদ’নাদা’য়ক ঘটনায় ভরা। জন্মের তিন ঘন্টা পরই তার মা মা’রা যান। পরে বাবার ভালোবাসা থেকেও ব’ঞ্চিত হন তিনি। য’ন্ত্রণা-অভিমান নিয়ে কৈশোরেই বাবার কাছ থেকে দূরে সরে যান। একসময় ময়মনসিংহ ছেড়ে চলে আসেন ঢাকায়। নিষ্ঠুর এই শহরে বেঁচে থাকার তাগিদে শুরু হয় তার নতুন সংগ্রাম। আলোর সন্ধান না পেয়ে শেষতক তিনি বেছে নেন অন্ধ’কারে শরীর বেচে জীবিকার পথ।
এভাবেই দিন গড়াতে থাকে। পরিণত বয়সে বাবার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তবে ‘বি’পথগামী’ মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হননি তিনি। এমনকি মৃ’ত্যুর পর পুলিশ তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি সব সম্পর্ক ত্যাগের কথা জানিয়েছেন।