






তসলিমা নাসরিন। এই নামটার মধ্যেই একটা বিদ্রোহ আছে। বহুদিন বাংলাদেশ ও ভারতের বাইরে তিনি। এই দুই দেশেই তাঁর প্রবেশ নিষেধ। তাঁর অপরাধ তিনি কলম ধরেছিলেন শক্ত হাতে। তাঁর কলমে উঠে এসেছিল অনেক না জানা সমাজের কথা! চাপা থাকা সমাজের নোংড়ামি। কিন্তু সে লেখা ছিল সাবলীল। তবে এই দোষে তিনি দেশ ছাড়া হয়েছিলেন। সভ্য সমাজে থেকেও তা আমাদের মেনে নিতে হয়েছে।







আমরা যে এখনও ঠিক কতটা সভ্য হতে পেরেছি তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়! তবে তাতে তসলিমা নাসরিনের কিছু এসে যায় না। কারণ কোনও সমাজ চাইলেই তাঁর কলম বন্ধ করতে পারবে না। অন্য দেশে থেকেও তিনি ধরেছেন কলম। আর সোশ্যাল মিডিয়া আসার পর থেকে পুরো চিত্রটাই বদলে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তিনি তাঁর লেখা ও মনের কথা পৌঁছে দিয়েছেন বাংলাদেশ ও ভারতের পাঠকদের কাছে। এখন কলকাতায় পুরোপুরিভাবে থাকতে না পারলেও, আসা যাওয়া অবশ্যই করতে পারেন।







তবে এবার তাঁর পোস্ট নিয়েই বাঁধল গণ্ডগোল! তিনি ফেসবুক দেওয়ালে পোস্ট করেন একটি লেখা। লেখাটি মজার। তাতে তিনি নানা রকম অসুখের কথা বলেছেন। যা দেখলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে তিনি খুব অসুস্থ। আদতে কিন্তু তা নয়। তবে এই পোস্ট দেখেই ভারত ও বাংলাদেশের বেশ কিছু মিডিয়া করে ফেললেন খবর। নাম করা সংবাদপত্ররাই এ খবর করলেন। প্রায় মৃত্যু মুখে ঠেলে দিলেন তাঁকে।—







শেষমেশ কি আর করা! মাঠে নামতে হল তসলিমা নাসরিনকে নিজে। তিনি আবারও একটি পোস্ট করে জানালেন, যে না তিনি অসুস্থ না। এবং তিনি লিখলেন, ‘হায় হায় মিডিয়ারে নিয়া আর পারা গেল না। আমি স্বাস্থ্যের ব্যপারে নিজের অবহেলার কথা লিখলাম কাল রাইতে, আর ছাপা হইয়া গেল পত্রিকাগুলাতে, ‘গুরুতর’ অসুস্থ তসলিমা, মারাত্মক ৩ রোগে আক্রান্ত তসলিমা, ফুস্ফুস কিডনি লিভারের সর্বনাশা রোগে আক্রান্ত তসলিমা।’ এই সব ভয়াবহ হেডলাইন দেইখা আমার শরীর কাঁপতাছে ডরে।







এখন একটাই মুশকিল, জিহাদিরা যদি আমারে খুন করে, তাইলে মাইনষে কইব,’জিহাদিরা ওরে খুন করে নাই, ও তো গুরুতর অসুস্থ ছিল, লিভার কিডনি ফুস্ফুস পইচ্যা গেছিল, তাই মরছে’। আমি যে জিহাদিদের হাতে মইরা শহিদ হমু, সেই শহিদ হওয়া থেইকাও ওরা আমারে বঞ্চিত করার প্ল্যান করতাছে।’ এই পোস্টের পর বোধহয় আর কিছু বলার থাকে না। মানুষটাকে থাকতে নাই দিতে পারেন এভাবে মেরে ফেলবেন না।–