






কুমিল্লার একটি সাধারণ পরিবারের মেয়ে মোসারাত জাহান মুনিয়া। পরিবার কুমিল্লায় থাকলেও ২০১৭ সাল থেকে ঢাকায় থাকছেন তিনি। মুনিয়ার স্বপ্ন ছিল সিনেমায় কাজ করার। এক প্রযোজকের হাত ধরে পরিচয় হয়েছিল ঢাকাই সিনেমার এক নায়কের সঙ্গে।
তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর অভিনেতা বাপ্পী রাজের সঙ্গে পরিচয় হয় মুনিয়ার। পরিচয় থেকে গভীর প্রেম। নিয়মিত মিরপুরের বাসায় একান্তে দেখা হতো তাদের। ওই বাসাতেই শোবিজের অনেকের সঙ্গে আড্ডাও মেতে উঠতেন তারা।







বাপ্পী রাজের সঙ্গে দুই বছর প্রেম ছিল মুনিয়ার। তার বোন (নুসরাত) এবং বাপ্পী রাজের পরিবার বিষয়টি জানত। কিন্তু মুনিয়ার ‘ঝামেলা’ থাকায় তার কাছ থেকে সরে আসেন বাপ্পী রাজ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্পর্ক থাকা অবস্থায় হঠাৎ অভিনেতা বাপ্পী রাজের কাছ থেকে উধাও হয়ে যায় মুনিয়া। তারপর এক সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে তার।







মুনিয়ার বড় বোনের অভিযোগ, ভিকটিমের সঙ্গে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিচয় এবং সম্পর্ক ছিল মুনিয়ার। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। মুনিয়া কুমিল্লা চলে যায় এবং পুনরায় ঢাকায় আসেন। পরবর্তীতে মুনিয়া তার বোনকে ফোন করে জানান, তার জীবনে যে কোনো সময় যে কোনো কিছু ঘটতে পারে।
এ ঘটনায় সোমবার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নিহত মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ এনেছেন তিনি।







এদিকে, মামলার এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত কর্মকর্তাকে আগামী ৩০ মে মামলার প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালত।
অন্যদিকে, মামলার আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামির বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলামের আদালত তা মঞ্জুর করেন।







সবশেষ এক শিল্পপতির সঙ্গে প্রণয় হয় মুনিয়ার। তাকে বিয়ে করেছেন বলেও সাবেক প্রেমিক বাপ্পী রাজকে জানিয়েছেন মুনিয়া। বাপ্পী রাজ সময় নিউজকে বলেন, ‘যে শিল্পপতির সঙ্গে এখন ওকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তাকে বিয়ে করেছিল। মুনিয়ার সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছিল গত বছর ফেব্রুয়ারিতে। তখন সে এই বিয়ের কথাটি বলেছিল। গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে থাকত বলেও আমাকে জানিয়েছিল মুনিয়া। তবে সে ওই লাইফ থেকে মুক্তি চাচ্ছিল, সাধারণ লাইফে ফিরে আসতে চাইছিল।’







মুনিয়ার বিষয়ে মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) মুঠোফোনে সময় নিউজকে বাপ্পী রাজ বলেন, ‘২০১৭-১৮ সাল, এই দুই বছর আমাদের সম্পর্ক ছিল। আমি মন থেকে ওকে পছন্দ করতাম। আমার পুরো পরিবার বিষয়টি জানত। সম্পর্কের মাঝে হঠাৎ গ্যাপ হয়ে গেল। তারপর মুনিয়া কোথায় যেন হারিয়ে গেল। গত বছর আমি খুলনাতে ছিলাম। এখনও খুলনাতেই আছি। তখন বলেছিল, আমরা বিয়ে করেছি। তারপরও চার-পাঁচদিন টানা কথা হয়েছিল আমাদের, ও সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিল। তারপর আবার রাগ করে আমাকে ব্লক করে দেয়।’







রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এক শিল্পপতিকে আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন মুনিয়ার বড় বোন নুজরাত জাহান।