বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে বাস করে নানা ধর্ম বর্নের মানুষ। তাদের আচার, রীতিনীতি এবং সংস্কৃতি একজনের থেকে অন্যজনের আলাদা। অনেক জাতি এখনো বিভিন্ন কুসংস্কারে আচ্ছন্ন। তেমনই এক রীতি চুরাল মুড়িয়াল। এটি প্রায় ২৫০ বছরের পুরানো রীতি। যা আজো ভারতের কেরালার মানুষ মেনে চলেন।







প্রতি বছর মার্চে পালন করা হয় এই উৎসব। এর তারিখ নির্ধারণ হয় মালায়লাম পঞ্জিকা অনুসারে। তবে অমানবিক আর নৃশংস বটে এই উৎসবের ধরণ। দেবীকে খুশি করতে ১০ বছরের নিচে ছেলে শিশুদের বলি দেয়া হয়। আলাপ্পুজার চেতিকুলাঙ্গারা দেবী মন্দিরে বার্ষিক কুম্বা ভরণী উৎসব চলাকালীন আয়োজন করা হয় এটি। এটি এই পূজার একটি অংশ। ভারত দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ দেশ গুলোর একটি।







১৩০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে রয়েছে নানা ধর্মের মানুষ। তাদের রয়েছে হাজারো রীতিনীতি। তবে অন্ধবিশ্বাস বা কুসংস্কার লালন করে আসছে অনেক গোষ্ঠী। যার অনেকগুলোই বেশ কঠিন আর নৃশংসই বলা যায়। তেমনই এক ভয়ঙ্কর রীতি এটি। যার দৃশ্য অন্যদের সহ্য করা কঠিনই বটে! এই উৎসব দক্ষিণের কুম্বা মেলা নামেও পরিচিত। জানলে অবাক হবেন বৈকি, এই পূজা করেন সমাজের ধনী শ্রেণির লোকেরা। তাই বলে নিজেদের ঘরের ছেলে সন্তানকে বলি দেন না তারা।







বলির জন্য অতি দরিদ্র পরিবার থেকে অর্থের বিনিময়ে কিনে আনা হয় ছেলে সন্তানদের। নাম মাত্র অর্থের বিনিময়েই তারা পেয়ে যান দেবীকে সন্তুষ্ট করার নামে এক অমানবিক সংস্কৃতি পালনে। মাত্র ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় পাওয়া যায় শিশুদের। উৎসবের দিন এই সব শিশুদের কলা পাতার পোশাকে সাজানো হয়। মাথায় পরানো হয় রাজার মতো মুকুট। শরীরে রং বেরঙ্গের মালা সুতা। তবে তা তৈরি করা হয় কাগজ দিয়ে। এরপর তাদের একটি শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিয়ে আসা হয় মন্দির চত্বরে। সেখানেই স্বর্ণের সুচে সুতা পরানো হয়।







এবার এই সুচ বলির জন্য আনা শিশুটির গায়ে ফুটানো হয়। রক্তাক্ত হতে থাকে শিশুটি। সেই অবস্থায় নেচে গেয়ে দেবীকে সন্তুষ্ট করার আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে ভক্তরা। ভক্তদের ধারণা শিশুদের রক্তেই সন্তুষ্ট হন দেবী। শপথ করে সারাজীবন মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকার।







একেক পরিবার দুটি ছেলে শিশু বলি দেয়। আর স্থানীয় সব পরিবারের জন্য ভোজের আয়োজন করে তারা। যে পরিবার এই পূজার আয়োজন করল বা বলি দিল। তাদের ধারণা দেবী তাদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছে। প্রথম ২০১৬ সালে একটি দাতব্য সংস্থা এই রীতি বন্ধে মামলা করে। কেরালার স্টেট কমিশন ফর চাইল্ড রাইটস প্রটেকশন প্রথম এই উদ্যোগ নেয়। ২০১৯ সালে এই কুসংস্কার বন্ধে কেরালা হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তবে তা মানতে নারাজ এই ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর।







এমনকি ভারতের উচ্চ আদালতও এই কুসংস্কার বন্ধের নির্দেশ দেয়। তবে সে সব কিছুর তোয়াক্কা না করেই নিজেদের মতো কাজ করে ছেলেছেন এখানকার মানুষ। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এখনো কেরালায় পালন করা হচ্ছে এই রীতি। আদালতে এই রীতির ভক্ত সংগঠনের এওকজন নারী একটি আবেদন পেশ করেন। যেখানে তিনি দাবি করেন, এই রীতিতে শিশুদের কোনো ক্ষতি হয় না। তবে আদালত তার আবেদন মেনে নেননি।







বর্তমানে একবিংশ শতাব্দীতে এসেও চলছে এমন অবুঝ শিশুদের ওপর নির্যাতন। যা অমানবিক এবং নৃশংসতার প্রতীক বলছেন অনেকে। দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত আর সর্ব বৃহত এই দেশে এখনো চলছে ধর্মের নামে কুসংস্কার চর্চা। যা বিশ্ববাসীকে অবাক করে।
সূত্র: ইন্ডিয়ানটাইমস
আরো খবর পড়ুন ;
ঘুষ নেয়ার সময় হাতেনাতে ধরা সরকারি কর্মকর্তা







ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের অডিটর পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেফতার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বিকেলে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভিযানে গ্রেফতার হন তিনি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাস্টার রোলের কর্মচারীদের বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধে ঘুষ দিতে বাধ্য করেছিলেন এই অডিট কর্মকর্তা।







বেতনভাতার চেক দিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাস্টার রোলের কর্মচারীদের কাছে ঘুষ দাবি করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের অডিটর কুতুব উদ্দিন। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে অবস্থান নেন গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের সদস্যরা। অবশেষে ঘুষ নেয়া পাঁচ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় কুতুব উদ্দিনকে।







পরে তাকে থানা পুলিশে হস্তান্তর করে এনএসআই। টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন অভিযুক্ত কর্মকর্তাও।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ নং পুলিশ ফাঁড়ি’র ইনচার্জ মো. সোহাগ রানা বলেন, টাকাসহ একজনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছি। কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে।







ভুক্তভোগীরা জানান, রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর সারাদেশের সড়ক ও জনপথ বিভাগে মাস্টার রোলে থাকা ৭ হাজার ৮৭৯ শ্রমিক কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণ ও বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। এরমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬৩ জন শ্রমিকের জন্য ১ কোটি ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই বেতনভাতা নিতে গেলে পাঁচলাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন অডিট কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন।







এদিকে, গ্রেফতার অডিট কর্মকতাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান জেলার হিসাব বিভাগ। জেলা অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিনান্স অফিসার মোহাম্মদ আলী বলেন, ওনাকে সাসপেন্ড করা হবে। পরে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কুতুব উদ্দিনকে থানায় হস্তান্তরের পর থানায় ঘুষ নেয়ার অভিযোগ মামলা হয়েছে।