বাসর রাতে স্বামীর বাড়িতে নানী ও আপন ভাইকে রেখে গভীর রাতে অজানার উদ্দেশ্যে পালিয়ে গেছে এক নববধূ। ঘটনাটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার দত্তেরাবাদ গ্রামের। এ ঘটনায় আজ সোমবার নববধূর ভাই আরিফুল ইসলাম শেখ আগৈলঝাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেছেন। ডায়রী সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ জুলাই বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার দত্তেরাবাদ গ্রামের মৃত নুর আলম হাওলাদারের পুত্র সোহাগ হাওলাদারের সাথে পাবনা জেলার আমিনপুর থানার রাজ নারায়নপুর গ্রামের হারিস শেখের কন্যা কলেজ ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার মীমের (১৯)
পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ওইদিনই তিনি (আরিফুল) ও নানী আয়শা খাতুন বরযাত্রীদের সাথে বোনজামাইর বাড়িতে আসেন। রবিবার (১২ জুলাই) রাতে নববধু সুমাইয়া বোনজামাই সোহাগ হাওলাদারের বাড়ী থেকে নিখোঁজ হয়। নববধুর স্বামী সোহাগ হাওলাদার জানান, রবিবার (১২ জুলাই) রাতের খাবার খেয়ে বাসরঘরে গিয়ে স্ত্রীকে দেখতে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করি। পরে ঘরের আলমিরায় থাকা ৫০ হাজার টাকা, স্বর্নালংকার ও মোবাইল ফোন দেখতে না পেয়ে স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হই। তবে নববধূ কার সাথে পালিয়েছে সে বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারেননি।
গ্রামটিতে মসজিদ নিষিদ্ধ, মুসল্লিরা নামাজ পড়েন রাস্তায় শহরটিতে মোট জনসংখ্যা প্রায় ৭৩ হাজার। যেখানে ৭ হাজারেরও বেশি মুসলিম ধর্মাবলম্বী। কিন্তু অবাক করার মতো বিষয় হলো, সেই শহরে মুসলিমদের জন্য কোনও ধরনের মসজিদ নির্মাণ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। যদিও স্থানীয় মুসলিমরা এমন নিষেধাজ্ঞা বদলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। খ্রিষ্টানদের সিনিয়র ধর্মীয় নেতা গডেফা মেরহা জানান, আকসুম তাদের কাছে মক্কা। তাদের বিশ্বাস ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোতে যেমন গির্জা নিষিদ্ধ, তেমনি আকসুমেও কোনও মসজিদ থাকতে পারে না। গডেফা বলেন, ‘আকসুম একটি পবিত্র স্থান। সিটি অব মনেস্ট্রি। এখানে কেউ যদি মসজিদ নির্মাণ করতে আসেন তাহলে আমরা মরব।
কখনোই এটা মেনে নেয়া হবে না। আমাদের জীবদ্দশায় মুসলিমদের এ আবেদন আমরা অনুমোদন করবো না।’ এদিকে ‘জাস্টিস ফর আকসুম মুসলিম’ এই ব্যানারে একদল মুসলিম শহরটিতে দিনের পর দিন মসজিদ নির্মাণের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের দাবি, মসজিদ নির্মাণ ও প্রার্থনার সুযোগ পাওয়া তাদের অধিকার। ইতিহাস বলে, ইসলামের সূচনালগ্নে মক্কায় অমুসলিম শাসকদের অত্যাচারে পালিয়ে প্রথম মুসলিমরা এসেছিল আকসুম শহরে।
তৎকালীন খ্রিষ্টান রাজা সে সময় তাদের স্বাগত জানিয়েছিলেন। মূলত আরব উপত্যকার বাইরে এটাই ছিল মুসলিমদের প্রথম কোনও উপস্থিতি। বর্তমানে আকসুমের ৭৩ হাজার অধিবাসীর শতকরা ৮৫ ভাগ অর্থোডক্স খ্রিষ্টান, ১০ ভাগ মুসলিম, আর ৫ ভাগ খ্রিষ্টান ধর্মের অন্য ধারার অনুসারী। এমতাবস্থায় আকসুমের কিছু কিছু মুসলিমও মনে করেন, মসজিদ নির্মাণের জন্য এই আন্দোলন অর্থহীন। কারণ প্রাচীন এ শহরটি অনাদিকাল থেকেই ধর্মীয় সহনশীলতার জন্য সুবিদিত।
২০ বছর ধরে আকসুমের বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক আজিজ মোহাম্মদ বলেন, ‘আকসুমে মুসলিম ও খ্রিষ্টানরা মিলেমিশে বসবাস করি। ওদের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক। আমাদের কোনও কাজে ওরা কখনও বাধা দেয় না। তবে বহু বছর ধরেই আমরা রাস্তায় নামাজ পড়ি। আমাদের জন্য একটি মসজিদ হলে খুবই ভালো হয়।’ আরো খবর পড়ুনঃ হিজড়াদের জন্য মাদ্রাসা চালু হতে যাচ্ছে এবার অবহেলিত হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশে একটি আলাদা মাদ্রাসা ঢাকায় চালু করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য দেশে এটি প্রথম একটি মাদ্রাসা। রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের লোহার ব্রিজ এলাকায় নির্মিত এই মাদ্রাসাটির নাম রাখা হয়েছে ‘দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসা’।
মাদ্রাসাটির শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সচিব মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ হুসাইনী বিবিসি বাংলাকে জানান, শুক্রবার( ৬ নভেম্বর) এই মাদ্রাসা উদ্বোধনের কথা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, উদ্বোধনের পর ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা দেড়শো’র বেশি হিজড়াকে এই মাদ্রাসায় ভর্তি করা হবে। আব্দুল আজিজ হুসাইনী বলেন, ‘ঢাকার যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, কামরাঙ্গীর চর, সিলেটি বাজার – এমন কয়েকটা এলাকায় আমাদের ২০-২৫ জন করে শিক্ষার্থী আছে, যাদের আমরা আলাদা করে পড়াতাম।
এই মাদ্রাসাটি উদ্বোধন করা হলে তাদের সবাইকে এখানে রেখে একসাথে পড়াতে পারবো।’ একটি তিন তলা ভবনে ‘দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসা’ স্থাপন করা হয়েছে। এর প্রতিটি তলায় প্রায় ১২০০ বর্গফুট জায়গা রয়েছে। এখানেই সব শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়া এবং পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। মাদ্রাসাটির মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুর রহমান আজাদ বিবিসি বাংলাকে জানান, এই শিক্ষার্থীদের পড়াতে ১০জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই এই মাদ্রাসা নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসায় পড়ার ক্ষেত্রে কোন বয়স সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি, অর্থাৎ হিজড়া জনগোষ্ঠীর যে কোনো বয়সের মানুষ এই মাদ্রাসায় ভর্তি হতে পারবেন। এখানে পড়াশোনা করতে শিক্ষার্থীদের কোন খরচ দিতে হবে না।
আবদুল আজিজ হুসাইনী জানান, মরহুম আহমদ ফেরদৌস বারী চৌধুরী ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে মাদ্রাসাটির যাবতীয় কার্যক্রম চলবে। মাদ্রাসা নির্মাণের সঙ্গে জড়িতরা জানাচ্ছেন, হিজড়া জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের পরিবার ও সমাজে এরা নানাভাবে অবহেলিত, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অবাঞ্ছিত। তাই এই জনগোষ্ঠীকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর লক্ষ্যে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই মাদ্রাসায় মূলত কুরআন শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরী শিক্ষাও দেয়া হবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। ফলে এখান থেকে পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কারিগরী পেশায় যুক্ত হতে পারবেন। এদিকে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য একেবারে একটি আলাদা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাকে স্বাগত জানিয়েছেন এই কমিউনিটির অনান্য সদস্যরা।