পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। আজ উপজেলার উত্তর সুবিদখালী সরকারি কলেজ রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার ওই শিক্ষক হলেন- ঝাটিবুনিয়া ম. ই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাসুম বিল্লাহ।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা মাসুম বিল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, আমার প্রতিবেশী ও আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি অলি মল্লিকের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বসতভিটার জমি নিয়ে বিরোধ চলছে এবং এ নিয়ে আদালতে একটি মামলাও চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, সোমবার দুপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ওই জমিতে অলি মল্লিক ও তার ভাই সহিদ মল্লিকসহ কয়েকজন ব্যক্তি বিরোধীয় জমিতে মাটি কাটতে গেলে আমি বাধা দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করে। আমার বসত ঘরে হামলা চালায় এবং আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেয় তারা। এ সময় আমার ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা অলি মল্লিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি শিক্ষককে মারধর করিনি, তার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে।
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে বিরোধ থাকা জমির কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরো খবর পড়ুনঃ
ছাত্রলীগের স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে গেলেন পুলিশ কর্মকর্তা
তিন সন্তানের জননীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাসেল মিয়া। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে।
বিবাহিত হওয়ার পরও প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে এখন উভয় সংকটে পুলিশ কর্মকর্তা রাসেল। এ ঘটনায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রবাসী মো. কবির হোসেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে সদর উপজেলার ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্রামে বিয়ে করেন কবির হোসেন। তাদের ঘরে রয়েছে তিন শিশুসন্তান। ২০১৭ সালের ২ আগস্ট সৌদি আরবে পাড়ি জমান কবির। ২০১৮ সালে কবিরের শ্যালক সাব্বিরের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আনতে গিয়ে সদর মডেল থানা পুলিশের এএসআই রাসেল মিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় কবিরের স্ত্রীর। পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন রাসেল।
কবিরের অভিযোগ, আমার স্ত্রীকে বিয়ে করে পুলিশ কর্মকর্তা রাসেল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। প্রবাসে থাকাকালে স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১১ লাখ ১৩ হাজার টাকা পাঠাই। সেই টাকা নিয়ে রাসেলের সঙ্গে চলে গেছেন স্ত্রী।
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রবাসীর স্ত্রীকে বিয়ে করেন দুই সন্তানের জনক রাসেল। প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর দ্রুত নোয়াখালী জেলায় বদলি হন রাসেল। তবে ঘটনার খবর পেয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর সৌদি আরব থেকে দেশে ছুটে আসেন প্রবাসী কবির। এরপর সংসার ভাঙার বিচার নিয়ে হাজির হন জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে।
কবির বলেন, বিয়ের পর থেকে পর্দানশীল ছিল আমার স্ত্রী। কিন্তু প্রবাসে থাকার সময় সেই স্ত্রীর বেসামাল ছবি দেখতে পাই। স্ত্রী সিগারেট টানছেন, মদের বোতল বিছানায় ছড়ানো। এমন ছবি আমার কাছে পাঠানো হয়। বিদেশে যাওয়ার সময় শ্বশুরবাড়ি কান্দিপাড়া এলাকায় স্ত্রী-সন্তানকে রেখে যাই। কিন্তু রাসেলের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পর কান্দিপাড়া ছেড়ে কলেজপাড়ায় বাসা ভাড়া নেয় স্ত্রী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রবাসে থাকাকালে গত ৫ মে কবিরকে তালাক দেন স্ত্রী। তালাকের নোটিশ আগস্ট মাসে সৌদি আরবে কবিরের হাতে পৌঁছে। এরই মধ্যে রাসেলকে বিয়ে করেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রবাসীর স্ত্রী বলেন, আগের স্বামীর সঙ্গে গত দুই বছর ধরে বনিবনা ছিল না। আমি যদি কবিরের সংসার না করি তাহলে আরেকজনকে বিয়ে করার অধিকার আমার আছে। রাসেল পারিবারিকভাবে আমার পরিচিত। তার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মানুষ নানা কথা বলছে। সে কারণে রাসেলকে বিয়ে করেছি।
তিনি আরও বলেন, সংসার করা এই বিয়ের উদ্দেশ্যে নয়। যদি সংসার করার ইচ্ছা থাকতো তাহলে তার সঙ্গে নোয়াখালী চলে যেতাম। আমি জানি তার বউ-বাচ্চা আছে। এরপরও তাকে বিয়ে করেছি।
তবে নিজেকে পরিস্থিতির শিকার দাবি করে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাসেল মিয়া বলেন, বিয়ে না করলে ঝামেলা হবে বলেই বিয়ে করতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।