বাংলাদেশে সূর্যগ্রহণ হয়েছে। রোববার (২১ জুন) বেলা ১১টা ১৭ মিনিটে রাজশাহী বিভাগে সূর্যগ্রহণ শুরু হয়। ঢাকায় শুরু হয়েছে ১১টা ২৩ মিনিটে। সর্বোচ্চ গ্রহণ হবে দুপুর ১টা ১২ মিনিটে। খালি চোখে সূর্যগ্রহণ না দেখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের জলবায়ু মহাশাখা জানিয়েছে, সূর্যগ্রহণ ঢাকা বিভাগে বেলা ১১টা ২৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডে শুরু হয়ে ২টা ৫২ মিনিট ৩ সেকেন্ডে শেষ, ময়মনসিংহে ১১টা ২৩ মিনিট ২ সেকেন্ডে শুরু হয়ে ২টা ৫১ মিনিট ২ সেকেন্ডে শেষ, চট্টগ্রামে ১১টা ২৮ মিনিট ১২ সেকেন্ডে শুরু হয়ে ২টা ৫৫ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে শেষ,
সিলেটে ১১টা ২৭ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে শুরু হয়ে ২টা ৫৪ মিনিট ৫২ সেকেন্ডে শেষ, খুলনায় ১১টা ২০ মিনিট ১৯ সেকেন্ডে শুরু হয়ে ২টা ৫০ মিনিট ৯ সেকেন্ডে শেষ, বরিশালে ১১টা ২৩ মিনিট ৫ সেকেন্ডে শুরু হয়ে ২টা ৫২ মিনিট ১ সেকেন্ডে শেষ, রাজশাহীতে ১১টা ১৭ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে শুরু হয়ে ২টা ৪৭ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডে শেষ এবং রংপুরে বেলা ১১টা ১৭ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে শুরু হয়ে ২টা ৪৮ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে শেষ হবে।
তারা আরও জানিয়েছে, ২১ জুলাই সকাল ৯টা ৪৬ মিনিট ৬ সেকেন্ডে সূর্যগ্রহণ শুরু হবে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের ইম্পফোন্ডো শহরে। কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে কঙ্গোর প্রজাতন্ত্রের বোমা শহরে বেলা ১০টা ৪৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে। সর্বোচ্চ গ্রহণ হবে ওইদিন ভারতের যোশীমঠ শহরে বেলা ১২টা ৪০ মিনিট ৬ সেকেন্ডে। কেন্দ্রীয় গ্রহণ শেষ হবে ফিলিপাইনের সামার শহরে বেলা ২টা ৩১ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে এবং গ্রহণ শেষ হবে ফিলিপাইনের মিন্দানাও শহরে বিকেল ৩টা ৩৪ মিনিটে।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর বলেছে, খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকানো যাবে না। এতে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি টেলিস্কোপ, বাইনোকুলার বা ক্যামেরা সরাসরি সূর্যের দিকে তাক করে গ্রহণ পর্যবেক্ষণ বা ছবি তুললেও চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তবে সোলার ফিল্টার সংযুক্ত করে এই গ্রহণ দেখা ও ছবি তোলা যাবে।
বাংলাদেশে এবারের সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর যেমনটা দেখা গিয়েছিল তদ্রূপ। অল্প সময়ের বিরতিতে এবার গ্রহণ হলেও এর পরেরবারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত।
তারা আরও বলছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বলয় সূর্যগ্রহণ (Annular solar eclipse) ঘটবে। কঙ্গো, লাইবেরিয়া, ইথিওপিয়া, পাকিস্তান, ভারত ও চীন থেকে এই গ্রহণ দেখা যাবে। বাংলাদেশ থেকে এই বলয় সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না। আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে বলয় গ্রহণটি বাংলাদেশ থেকে আংশিক সূর্যগ্রহণ হিসেবে দেখা যাবে।
এ বিষয়ে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী জানান, করোনা সংক্রমণের কারণে এবার জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে কোনো পর্যবেক্ষণ ক্যাম্প আয়োজন করা হবে না। তবে এ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য সীমিত পরিসরে গ্রহণ পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
সমুদ্রের জলস্তর তিন ফুট পর্যন্ত বেড়ে যাবে
উত্তর মেরু এবং তার নিকটবর্তী এলাকা’তে ইতিমধ্যেই বরফ গলা শুরু হয়ে গেছে। এবার হিমালয় ও দক্ষিণ মেরু’র হিমবাহ ও বরফের স্তরও খুবই দ্রুত হারে গলে যাবে। এ দিকে সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা বাড়ায় মাছ ও সমুদ্রের প্রাণীদের জীবন-যাপনও বিপন্ন হয়ে উঠবে, এর ফলে খাদ্য সঙ্কটও দেখা দিতে পারে। গ্রীনহাউস গ্যাসের নির্গমনের এই ধরনেরই সরাসরি প্রভাব খুব তাড়াতাড়িই পাওয়া যাবে। সম্প্রতি, পেশ করা জাতিসংঘের পরিবেশ সংক্রান্ত প্যানেলের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই অশনি সঙ্কেতই রয়েছে।
জাতিসংঘের এই প্যানেলের প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে, বিশ্ব উষ্ণায়ন’কে আটকাতে খুব বেশি ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে। এর পরেই বিশ্বের ৩৬টি দেশ মিলে একশো জনেরও বেশি বিজ্ঞানীদের নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠিত হয়। গত কয়েক মাসে এই কমিটি দু’টি রিপোর্ট পেশ করেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত শীর্ষ বৈঠকে তৃতীয় অর্থাৎ ফাইনাল রিপোর্ট পেশ করা হয়।
পরিবেশ কমিটি’র ভাইস চেয়ারপার্সন কো ব্যারেট জানিয়েছেন যে, “এই রিপোর্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই প্রথম পরিবেশবিদগণ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চল গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে। যেমন, তাঁরা হিমালয়ে গিয়েও কাজ করেছেন, তেমনই আবার প্রত্যন্ত মেরু অঞ্চলে গিয়েও কাজ করেছেন। এবং তাঁরা জানিয়েছেন যে, এই সব প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতেও জলবায়ু পরিবর্তনের স্পষ্ট প্রভাব পড়েছে।”
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, বর্তমানের হারেই যদি কার্বন গ্যাস নির্গমন হতে থাকে, তা হলে ২১০০ সালের মধ্যেই সমুদ্রের জলের স্তর তিন ফুটে’রও বেশি বেড়ে যাবে। ফলে, উপকূলবর্তী অঞ্চলে, যেখানে আগে একশো বছরে একবার বন্যা হতো, সেখানে প্রতি বছরই বন্যা হবে। ফলে, বিপদে পড়বে এই সমস্ত উপকূলবর্তী অঞ্চলের বসবাসকারী প্রায় ৬৮ কোটি মানুষ।
পৃথিবীর অন্যতম বরফের চাদরে (আইস শিট) ঢাকা অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডে ইতিমধ্যেই বরফ গলা শুরু হয়ে গেছে। গ্রিনল্যান্ডের এই বরফের চাদর যদি তাড়াতাড়ি গলে যায়, তা হলে জলস্তর কুড়ি ফুটেরও বেশি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুই মেরুতেও বরফ গলছে। উত্তর মেরু এলাকার বরফ গলনের হার সবথেকে বেশি। পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন যে, এই বরফ গলা নাকি আর থামানো সম্ভব নয়।
ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কার অধ্যাপক রেজিন হকের দাবি, “এর ফলে আগামী দু’শো বছরে সমুদ্রের জলস্তর কয়েক মিটার পর্যন্ত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছেইতিমধ্যেই ইটালির মঁ ব্লঁ পর্বতের এক হিমবাহ যে কোনো সময়ে ভাঙ্গার আশঙ্কায় সেখানকার সমস্ত জনবসতি সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গলতে শুরু করেছে প্লানপিনসিউ হিমবাহের বরফও। এই হিমবাহটি প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫ ইঞ্চি এগিয়ে আসছে। ফলে, আশঙ্কা যে কোনো মুহূর্তেই পাহাড় থেকে ধসে পড়তে পারে এই বরফের নদী।