২০১৪ সালে দূর আকাশের তারা হয়ে যান রনি তালুকদারের বাবা মনোরঞ্জন তালুকদার। তার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে ক্রিকেটার বানাবেন। কিন্তু তিনি দেখে যেতে পারেননি তার ছেলে জাতীয় দলের হয়ে দাপট দেখাচ্ছেন।২০১৫ সালে যখন প্রথমবার
জাতীয় দলে সুযোগ পান রনি, তার আগের বছর ক্রীড়াপ্রেমী মনোরঞ্জন পরোলোকগমন করেন। ২০১৫ সালে একটি মাত্র ম্যাচ খেলে ছিটকে যাওয়া রনি ৮ বছর পর জাতীয় দলে ফেরেন। তার এই প্রত্যাবর্তন হয়েছে রাজার মতোই। কিন্তু
এমন দিনেও তার ভীষণ মন খারাপ, পাশে যে নেই স্বপ্ন পূরণের সারথী- বাবা!ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে রনি জাতীয় দলে ফেরেন। তিন ম্যাচে বড় সংগ্রহ না পেলেও ব্যাটিংয়ে একাগ্রতা দেখাতে পেরেছেন। সোমবার (২৭ মার্চ)
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তো তাণ্ডব চালিয়েছেন চট্টগ্রামের ২২ গজে।২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর ৩৮ বলে খেলেছেন ৬৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। এমন ক্যামিও ইনিংস খেলে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ম্যাচ সেরার পুরস্কারও তুলে নিয়েছেন
তিনি। ফিল্ডিং করতে গিয়ে কাঁধে আঘাত পাওয়ায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি, আসতে পারেননি সংবাদ সম্মেলনেও। তবে নিজের ফেসবুকে বাবাকে স্মরণ করে পোস্ট দিতে দেরি করেননি।কোনও ম্যাচ সাফল্য পেলেই কিংবা
কোনও মাইলফলকে পৌঁছালেই রনি আকাশের দিকে তাকিয়ে বাবাকে খোঁজেন। অপেক্ষায় থাকেন বাবার ফোনের। ২০১৪ সালের আগে এভাবেই রনির দিন যাপন হতো। কোনও ম্যাচে সেঞ্চুরি পেলেই বাবার নাম্বার থেকে কল আসা ছিল নিশ্চিত।
কিন্তু এখন বাবাই তো নেই, ওই নম্বর থেকে তাই আর ফোন আসে না। রনির তাই আক্ষেপের শেষ নেই। আজ সোমবার হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর আকাশের দিকে তাকিয়ে বাবাকেই যেন খুঁজছিলেন ঢাকার এই ক্রিকেটার।
হয়তো ম্যাচ শেষে ফোন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েও ছিলেন কলের অপেক্ষায়। রনি জানেন তার বাবার নম্বর থেকে আর কখনোই কল আসবে না, তবু তার বিশ্বাস, স্বর্গ থেকে নিশ্চিতভাবেই বাবা তার এই সাফল্য উদযাপন করছেন!
ম্যাচ শেষ হতেই রনি নিজের ফেসুবকে বাবাকে নিয়ে একটি পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘বাবা তোমাকে অনেক মনে পড়ছে। আমি জানি তুমি উপরে থেকে আমাদের দেখছো।’