বিভিন্ন সময় নিজেদের হাস্যকর সব সিদ্ধান্তের কারণে গণমাধ্যমের শিরোনামে থাকেন বিসিবি। বিসিবিকে নিয়ে আলোচনা যতটা হয় তার চেয়ে বোধ হয় সমালোচনাটাই বেশি করা হয়।তবে নাটকীয়তার হিসেবে বিগতবারের সকল রেকর্ডই
এই বিপিএলে ভেঙে ফেলছেন বিসিবি। বিপিএলের নামিদামি বিদেশী ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতি, ডিআরএস না থাকা, আম্পায়ারিং বিতর্ক ইত্যাদি বিষয়বস্তু নিয়ে বিপিএল শুরুর আগ থেকেই কথাবার্তা হচ্ছিল। পরবর্তীতে সাকিব-মাশরাফির মন্তব্য
সে সমালোচনাকে আরও বেশি তীব্র করে ফেলে। এই সবকিছু থেকে পরিক্রান পেতে দিন দুয়েক আগে সাগরিকায়বোর্ড মিটিং করেন বিসিবি কর্তারা। প্রশ্ন যখন কিভাবে বিপিএলের মান ঠিক করা হবে কিংবা ডিআরএসের ব্যাপারে কি করা হবে,
তখন বিপিএলের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বলিউডের কাকে কাকে আনা যায়এই বিষয় নিয়েই ভাবতে ব্যস্ত বিসিবি। ব্যাপারটি শুধু চমকপ্রদ নয় হাস্যকরই বটে। ব্যর্থতা ঢাকার জন্য কি এক অদ্ভুত পন্থাই না অবলম্বন করতে চাচ্ছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।
তাদের মতে জমকালো একটি সমাপ্তি অনুষ্ঠান করলেই দেশবাসী হয়তো ভুলে যাবে বিপিএলের এতসব বিতর্ককে। ব্যাট-বলের লড়াই বিপিএলে ক্রিকেট বাদে সংস্কৃতির পেছনে এত টাকা ঢালারযুক্তিগতাই বা কি? এছাড়াও দিন কয়েক আগে বিভিন্ন
সংবাদমাধ্যমে বিসিবি কর্তারা বলে আসছেন দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাড়তি খরচ এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।অর্থাৎ প্রতিবারের মতো জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সূচনা করা হবে না এবারের বিপিএলের। এছাড়াও
বিগত বিপিএল গুলোর তুলনায় এবারের আসরে ড্রাফটে ক্রিকেটারদের মূল্য বেশ কম ধরা হয়েছে।বিশ্বের অন্যান্য লীগের তুলনায় তো তা অতি নগণ্য। এছাড়াও দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটারদের মৌসুমী ফি এবং ম্যাচ ফি বাড়ানোর কথা উঠলে তাদের
সীমিত অর্থ এমনটি দাবি করে বিসিবি।অথচ মোটামুটি সবারই জানা এক হাজার কোটি টাকার উপরে এফডি রয়েছে বিসিবির। গ্যালারিতে ভাঙ্গা চেয়ার এবং বসার জায়গা গুলোর জীর্ণশীন্য অবস্থা বেশ কয়েকবার টিভির পর্দায় চোখে
পড়ে। অথচ এসব ঠিক করার ব্যাপারে যেন কোনো উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করে না ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেটারদের বেতন কিংবা দেশের ক্রিকেটের অবকাঠামো উন্নয়নের বেলায় তাদের অর্থ সীমিত।তবে বলিউড তারকাদের পেছনে কোটি
কোটি টাকা ব্যয় করতে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয় না বিসিবির। সব মিলিয়ে বিসিবির কার্যক্রম বেশ ঘোলাটেই বটে। ক্রীড়া বিশ্লেষককিংবা সাধারণ মানুষের পক্ষে যা বুঝা অতি দুষ্কর। বিসিবি কখন কি চিন্তা ভাবনা করেন তা বোধহয় তারাই ভালো
বলতে পারবেন। তবে একটি ব্যাপার পরিষ্কার এভাবে দর্শকদের আইওয়াশ করেখুব বেশিদিন তাদের খুশি রাখা সম্ভব নয়। বিপিএলে বলিউড তারকাদের উপস্থিতির চেয়ে মানসম্পন্ন ক্রিকেটারদের উপস্থিতি থাকাটাই দর্শকদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এভাবে দর্শকদের আইওয়াশনা করে সত্যিকার অর্থে ক্রিকেটের উন্নয়ন হবে এমন কিছু পদক্ষেপ দ্রুতই নিবে বিসিবি এমনটি রইল প্রত্যাশা।