অফসাইডের এ কেমন নিয়মঃ বিশ্বকাপে গোল বাতিল, অন্য জায়গায় ‘বৈধ’

কাতার বিশ্বকাপে খুব আলোচনায় এসেছিল অফসাইডের নিয়ম। বিশেষ করে সৌদি আরবের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার তিনটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হওয়ার পর। সেই তিন গোলের দুটি লাওতারো মার্তিনেজের, একটি মেসির।তাঁরা তবু অফসাইডের

ফাঁদে আটকে গিয়েছিলেন। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র অফসাইডে না থেকেই গোল করেছিলেন। সেটিও বাতিল হয়ে গিয়েছিল। পরে জানা যায়, সে সময় অফসাইডে ছিলেন তাঁর সতীর্থ রিচার্লিসন।প্রশ্ন উঠেছিল, রিচার্লিসন তো বল

স্পর্শই করেননি। তাহলে অফসাইডের কারণে ভিনিসিয়ুসের গোল বাতিল হলো কেন? গোলটির আগে মূল আক্রমণটি যখন রচনা হয়েছে, সে সময় ভিনি বল স্পর্শ করার আগেই নিজের অবস্থান থেকে নড়ে যান রিচার্লিসন। ভিনি বল স্পর্শ করার পর তিনি নড়লে

বা দৌড়ালে আর এটি অফসাইড হতো না।কাল ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যাচেও এমন একটি ঘটনা ঘটে। ব্রুনো ফার্নান্দেজ দলকে ১–১ সমতায় ফেরাতে যে গোল করেন, সেই গোলের আক্রমণ রচনার শুরুতে অফসাইড পজিশনে

ছিলেন মার্কাস রাশফোর্ড। বল স্পর্শ না করলেও তিনি প্রায় মাঝমাঠ থেকে দৌড়ে সিটির বক্সের সামনে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে বাঁ প্রান্ত থেকে দৌড়ে গিয়েছিলেন ফার্নান্দেজ। শেষ মুহূর্তে তিনিই শট নেন এবং গোল দেন।প্রথমে সহকারী রেফারি অফসাইডের

পতাকাই তুলেছিলেন। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেন ফার্নান্দেজ ও রাশফোর্ড। একই সঙ্গে ইউনাইটেডের অন্য খেলোয়াড়েরাও সেই প্রতিবাদে যোগ দেন। পরে ভিএআর দেখে রেফারি সিদ্ধান্ত বদলে অফসাইড বাতিল করেন এবং বহাল

রাখেন গোল। রেফারির এই সিদ্ধান্তের পক্ষে–বিপক্ষে আলোচনা চলছে এখনো।ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি অ্যালান শিয়ারার টুইট করেছেন, ‘দলকে ১–১ গোলে সমতায় ফেরানো গোলটি ব্রুনো ফার্নান্দেজকে করতে দিয়ে খুব চতুর কাজ করেছে মার্কাস

রাশফোর্ড।’ চেলসির সাবেক গোলকিপার পিওতর চেকের সুরটা এর বিপরীত, ‘ইউনাইটেডের প্রথম গোলটি প্রমাণ করে, যাঁরা নিয়ম বানাচ্ছেন, তাঁরা খেলাটি বোঝেনই না।’এখন দেখে আসা যাক ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ডের (আইএফএবি)

নিয়মের বইয়ে কী লেখা আছে। কেন রেফারি ভিএআর দেখে এটিকে অফসাইড না দিয়ে গোল দিলেন।আইএফএবির অফসাইডের ২০২২–২৩–এর নিয়মের শুরুতে লেখা আছে, কোনো সতীর্থ যখন বল স্পর্শ করবে বা ছাড়বে, তখন অফসাইড পজিশনে থাকা

খেলোয়াড় সক্রিয় থাকলে সেটি অফসাইড বলে বিবেচিত হবে, যদি ১) নির্দিষ্ট সেই খেলোয়াড় প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের বল ধরতে বাধার সৃষ্টি করে তাঁদের দৃষ্টিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন অথবা ২) প্রতিপক্ষকে বলের জন্য চ্যালেঞ্জ জানান, অথবা ৩) বল প্রতিপক্ষের খুব কাছে থাকা অবস্থায় তিনি সক্রিয়ভাবে খেলার চেষ্টা করেন অথবা ৪) তাঁর গতিবিধি প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের খেলায় প্রভাব ফেলে।